রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
রবিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
অটোরিকশা কাল হলো কিশোর ফাহিমের নিথরদেহ মিললো ঝোপে বিটেশ্বর উন্নয়ন ফোরাম-কে সন্মাননা ক্রেস্ট প্রদান কাদিয়ারভাঙ্গা বেগম রহিমারোশন মাদরাসায় অভিভাবক কাউন্সেলিং খেলাফত মজলিস দাউদকান্দি উপজেলা শাখার উদ্যোগে তরবিয়তী সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে ২২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাবেশ দাউদকান্দির হলি কেয়ার আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত দাউদকান্দিতে রাইট টক অফ বাংলাদেশের কমিটি ঘোষণা তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে গাছের চাড়া দিলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিইউইউএফ ও দানাফ মদিনাতুল উলূম কামিল মাদ্রাসার কমিটিতে সভাপতি মাও: আবুল বাশার, দাতা সদস্য রবিন চৌধুরী ডাকসু নির্বাচনে ভিপি ও সম্পাদক পদে লড়ছেন দাউদকান্দির তিন শিক্ষার্থী জাসাস কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা শাখার কমিটি গঠিত লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেছেন ড.খন্দকার মোশাররফ পাঁচওয়াক্ত নামাজে কি পড়া হয় এবং অর্থ কী? দাউদকান্দিতে নিরাপদ অভিবাসনে করণীয় বিষয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ জাতীয় স্বর্ণ পদক পাওয়ায় রহমত আলীকে সংবর্ধনা দিলো উপজেলা প্রশাসন ২৫ বছর ধরে মাছ উৎপাদন করে আসছি: স্বর্ণপদকে ভূষিত রহমত আলী দাউদকান্দির নবাগত ইউএনও নাছরিন আক্তারকে ধানসিঁড়ি সমাজকল্যাণ পরিষদের ফুলেল শুভেচ্ছা ডাকসু নির্বাচনে সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন দাউদকান্দির হাসিব রানা জুরানপুর আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য হলেন সাবেক ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান ভবঘুরে লোকদের উচ্ছেদ করে নিরাপদ ক্যাম্পাস উপহার দিতে চাই: ডাকসু ভিপি প্রার্থী জাহিদ
দাউদকান্দির পুটিয়া গ্রামের তরুণ হোসাইনের

"সখের ঘটিতে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে"

"সখের ঘটিতে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে"
"তিন বছর আগের কথা। এক গাছি খেজুর গাছ পরিস্কার করতে আসে হোসাইনদের গ্রামে। তখন সে আরো ছোট ছিলো। গাছের নীচে দাড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে তা দেখছে। সে এতে আকৃষ্ট হয় এবং গাছিকে বলে তাকে এটা শিখানোর জন্য। গাছি তখন খেজুর গাছ পরিস্কার ও রস সংগ্রহের পদ্ধতি শিখিয়ে দেয় তাকে।

তারপর থেকে ৩ বছর ধরে নিজেদের দুইটি গাছে প্রতি বছর ঘটি দেয় হোসাইন। এতে তাদের পরিবারে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে। আত্মীয় স্বজনের বাসায় পাঠাচ্ছে । বন্ধুরাও রস ক্ষেতে আসে। বিক্রি করতে না চাইলেও অনেকে কিনে নেয়।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন। বয়স ১৯। বাবা নেই। দুই ভাই দুই বোন। মা, দাদা-দাদী চাচারা আছে। যৌথ পরিবারে বসবাস। সে স্থানীয় সিঙ্গুলা ইসলামিয়া ডিগ্রি মাদরাসা থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

জানা যায়, শীত আসলেই দুইটি খেজুর গাছ পরিস্কার করে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করে হোসাইন। প্রতিদিন বিকেলে দুটি গাছে ঘটি দেয়। সকালে ঘটি নামালে ৪ থেকে ৫ কেজি রস সংগ্রহ হয়। আর শীত বেশি পরলে ৫ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা যায়।

বছরে ৩ মাস রস সংগ্রহ করে। এই বছর একমাস ধরে রস সংগ্রহ করছে। আগামী দের থেকে দুই মাস রস সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান। যৌথ বড় পরিবার তাদের। এছাড়াও আত্মীয় স্বজনরা রস নেয়। তাই রস বিক্রির তেমন তাগিদ নেই হোসাইনের।

তবে, অনেকে রস নিতে আগ্রহ প্রকাশ করায় মাঝে মধ্যে বিক্রি করে। লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এতে তার কিছু টাকা হাতে আসে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোসাইন তখন গাছে ঘটি বসাচ্ছে।

দাদী সাজেদা বেগম নীচে দাড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, সে আমার বড় ছেলের নাতি। আমার নাতি তিন বছর ধরে এই দুইটা গাছে ঘটি দেয়। গাছ থেকে পাওয়া রস আমার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে খাই। একসময় অনেক রস পাওয়া যেতো। এখন তেমন নাই।

মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, তিন বছর আগে এক গাছি আমাকে একবার দেখাইয়া দেয়। তারপর থেকে আমি নিজেই গাছে ঘটি দেই। শীতকাল আসলেই খেজুরের রস নিয়ে আমাদের ভাবতে হয় না। দুটি গাছ থেকে সংগ্রহ হওয়া রস আমাদের পরিবারের চাহিদা মিটায়। আমার বন্ধুরা আসে তাদেরকে আমি রস দেই। আমি এতে আনন্দিত। আলহামদুলিল্লাহ আমার দুইটি গাছের রস অনেক মিস্টি। ক্ষেতেও সুস্বাদু।

দাদা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার নাতি সখ করে গাছে ঘটি দিয়েছিলো। তার সখের ঘটি এখন আমাদের চাহিদা পূরণ করছে। খেজুরের রস আমাদের গ্রামীন ঐতিহ্য। এটা সংগ্রহ ব্যবস্থা আমাদের ধরে রাখতে হবে।

ঐ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা এআইপি (এগ্রিকালচার ইমপর্টেন্ট পার্সন) মতিন সৈকত বলেন, একটা সময় ছিলো। শীতকাল আসলে গ্রামে ভিন্ন রকমের আমেজ বিরাজ করতো। খেজুরের রসের গুর তৈরী হতো। সেই গুর দিয়ে নানান রকম পিঠা বানানো হতো।আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পাঠানো হতো। রসের সিন্নি তৈরী করা হতো।

এখন তা নেই বললেই চলে। খেজুর গাছ থাকলেও রস সংগ্রহ করার গাছি নেই। তাই আমাদের ঐতিহ্যবাহি সুস্বাদু এই খাবারটি বিলুপ্তির পথে। হোসাইন আমাদের জন্য অনুকরণীয়। তার মতো গ্রামে গ্রামে রস সংগ্রহে আগ্রহী তরুণ থাকলে। রসের চাহিদা মিটতো এবং এই প্রজন্ম এর স্বাদ নিতে পারতো। ঐতিহ্য না হারিয়ে, বেঁচে থাকতো।

পিকে/এসপি
অটোরিকশা কাল হলো কিশোর ফাহিমের নিথরদেহ মিললো ঝোপে

অটোরিকশা কাল হলো কিশোর ফাহিমের নিথরদেহ মিললো ঝোপে